জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) চারুকলা বিভাগের উদ্যোগে ৩ ব্যাপি আরবি ক্যালিগ্রাফি কর্মশালা চালু করা হয়েছে। আজকের প্রথম দিনের উদ্বোধন করেন, জাবির কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো: মোজাম্মেল হক।
১৭ মার্চ বেলা ১১টায় এই কর্মশালার প্রথম ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ক্যালিগ্রাফি চারুকলার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ৷ এটির মাধ্যমে দেশ-বিদেশে কর্মক্ষেত্রের অবারিত সুযোগ রয়েছে। শিক্ষার্থীরা এসব শেখার মাধ্যমে সাংস্কৃতিক চর্চার পাশাপাশি নিজেদের ক্যারিয়ারে সুবিধাজনক অবস্থায় যেতে পারবেন।
প্রশিক্ষন নিতে আসা চারুকলা বিভাগের ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী জুবায়ের বলেন, আজকের ক্লাসে আমাদেরকে বেসিক লেভেলের বিষয়গুলো শিখিয়ে পরবর্তী দিনের জন্য কাজ দেওয়া হয়েছে। আমার আগে থেকেই ক্যালিগ্রাফির প্রতি আগ্রহ ছিল। কিন্তু কখনও শেখা হয়নাই। আমি এখন শিখছি। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে এটার প্রাসঙ্গিকতা বেড়েছে। ভবিষ্যতে এটি নিয়ে কাজ করতে চাই।
আরেক শিক্ষার্থী নূর নাহার নুনি বলেন, অনেকে মনে করে চারুকলা সংশ্লিষ্টরা নাস্তিক আর ক্যালিগ্রাফি একটি ধর্মীয় বিষয়। এদুটোর মাঝে কোন সম্পর্ক নেই। আমাদের এখানে ক্যালিগ্রাফি শেখানো হচ্ছে। মানুষ যেন বুঝে আমরা ইসলাম বিরোধী নই।
চারুকলা বিভাগের ৫৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী হিজল বলেন, এই কর্মশালায় অংশগ্রহণ করে আমার অনেক ভালো লেগেছে। আমি একটি শিল্পের সাথে পরিচিত হতে পেরেছি। নতুন একটা ভাষা শেখারও সুযোগ হচ্ছে। বিভিন্ন ডিজাইনে লিখতে শিখছি। এটি আমাদের সংস্কৃতির অংশ। এমন সুন্দর উদ্যোগ নেওয়ার জন্য চারুকলা বিভাগকে ধন্যবাদ জানাই।
সহপ্রশিক্ষক জামিল আহমেদ বলেন, ক্যালিগ্রাফি শিল্পেরই একটি ধারা। এটি চারুকলা বিভাগের প্রাচ্যকলার একটি শাখা। চারুকলার ড্রইংয়ের পাশাপাশি যদি শিক্ষার্থীরা ক্যালিগ্রাফি আয়ত্ব করতে পারে তাহলে তারা দেশ-বিদেশে বিভিন্ন বড় বড় প্রজেক্টে কাজ করার সুযোগ লাভ করবে।
এ বিষয়ে চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ধীমান সরকার বলেন, পবিত্র মাহে রমজান মাসে জাবি চারুকলা বিভাগের পক্ষ থেকে এর ১৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীকে সামনে রেখে আরবি ক্যালিগ্রাফি কর্মশালাটির আয়োজন করা হয়েছে। এই কর্মশালায় মূলত দুইটি বিষয়ের সংযোগ সাধন করে একে প্রাসঙ্গিক করে তোলার প্রয়াস রয়েছে আমাদের।
একাধারে পবিত্র রমজান মাসে আরবি হরফের লিখনের মাধ্যমে আধ্যাত্মিক ভাবনার অভিপ্রকাশ এবং দৃশ্যকলা শিক্ষার পেশাদারি দৃষ্টিকোণ থেকে আরবি ক্যালিগ্রাফির শিল্পমূল্য এবং আরবি ভাষায় চর্চাকারী জনগোষ্ঠীর সাথে সংযোগ স্থাপনের সম্ভাবনাগুলোকে যাচাই করা। আমাদের দেশে একটি বৃহৎ পরিসরের জনমানুষের চর্চার মাঝে আমাদের বিভাগের পেশাগত চর্চার গ্রহণযোগ্যতা তৈরি ও একাত্মতা স্থাপন করাও একটি উদ্দেশ্য। সেকারণে নির্দিষ্ট সংখ্যক আসনের বিপরীতে পুরো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের শিক্ষার্থীকে আমরা আহ্বান জানিয়েছি এই কর্মশালায় সম্পৃক্ত হবার জন্য; আশানুরূপ সাড়াও পেয়েছি। একইসাথে ভবিষ্যতে আমাদের দৃশ্যশিল্পশিক্ষার একটি অনুষঙ্গ হিসেবে এই ক্যালিগ্রাফি চর্চাকে কোন কোর্সের অন্তর্ভুক্ত করা যায় কিনা সে বিবেচনাও রাখছি। সেই লক্ষ্যে আমাদের বিভাগের পক্ষ থেকে প্রতিবছরই বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন ইন্টারএ্যাকটিভ কর্মশালার উদ্যোগ নেবার ইচ্ছা আছে।
jk/h
মন্তব্য