বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫
 

কাউখালীতে ঐতিহাসিক বদর দিবস উপলক্ষে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৫

---

এনামুল হক, বিশেষ প্রতিনিধি:

কাউখালীতে যথাযথ মর্যাদায় ঐতিহাসিক  বদর দিবস উপলক্ষে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে । গতকাল ১৮ই মার্চ মঙ্গলবার পিরোজপুর জেলার কাউখালী উত্তর বাজার বাইতুন নূর জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে বিকাল ৪ ঘটিকায় ঐতিহাসিক বদর দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা, দোয়া-মোনাজ ও ইফতার মাহফিলে স্থানীয় প্রায় এক হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমান অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে বাইতুন নূর জামে মসজিদের সভাপতি অ্যাডভোকেট স্বপন তালুকদারের সভাপতিত্বে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠন পরিচালনা  করেন অত্র  মসজিদের  ইমাম ও খতিব মাওলানা আবু বক্কর সিদ্দিক।

এ সময় গুরুত্ব পূর্ণ আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন কাউখালী  উত্তর বাজার নেছারিয়া  আজিজিয়া  হাফেজী মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা হাফেজ এবাদত হোসেন।অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইসলামিক কমপ্লেক্স মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা জামাল হোসেন, জমিয়তে হিজবুল্লার নেতা মাওলানা মাহফুজুল হাসান ও হাফেজ  শিহাব উল্লাহ প্রমূখ।

আলোচনা সভায় বক্তারা ইসলামের ঐতিহাসিক বদর দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন,

দ্বিতীয় হিজরীর ১৭ ই রমজান মক্কার অদূরে বদর প্রান্তে ইসলামের শত্রু এবং ইসলামের পক্ষের শক্তির সাথে প্রথম সম্মুখ যুদ্ধে মুসলমানরা বিজয় অর্জন করেন। আর এই যুদ্ধের প্রধান সেনাপতির দায়িত্ব পালন করেন হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। নবী করিম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নেতৃত্বে মাত্র ৩১৩ জন সৈন্য নিয়ে কাফেরদের ১০০০ সুসজ্জিত সৈন্যর সাথে  সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে মুসলমানরা বিজয় অর্জন করেন। সেদিন মুসলমানদের ৩১৩ জন সৈন্য মধ্যে  ৭০ জন মুজাহিদ ও বাকিরা ছিল আনসার। আর কাফেরদের এক হাজার সৈন্যের মধ্যে একশত অশ্বারোহী ৭শত উষ্টারহি  বাকিরা পদাতিক বাহিনী হওয়ার পরেও অল্প সংখ্যক রোজাদার মুসলমানদের সাথে এই যুদ্ধে কুরাইশ কাফেররা পরাজিত হন। ঐতিহাসিক বদরের  যুদ্ধের মধ্য দিয়ে সত্য এবং মিথ্যার পার্থক্য প্রমাণিত হয়।

পবিত্র কুরআনে বদর দিবসকে  ইয়াওমুল ফোরকান বা ফয়সালা কারী দিন হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আর বদরের যুদ্ধের মধ্য দিয়ে ইসলামের বিজয়ের ধারা সূচিত হয়ে পূর্ণাঙ্গ ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। যে কারণে মুসলমানদের জন্য এই দিনটি খুবই স্মরণীয় একটি দিন হিসাবে বিবেচিত হয়।

আল্লাহর শক্তির সাথে কারো শক্তির তুলনা হয়না। আল্লাহ যা চান তাই হয় এই যুদ্ধে বিজয়ের মধ্য দিয়ে তা প্রমাণিত হয়।


এই যুদ্ধে ১৪ জন সাহাবী শাহাদাত বরণ করেন। অন্যদিকে কোরাইশ কাফেরদের ৭০ জন সৈন্য নিহত হয় এবং ৭০ জন মুসলমানদের হাতে বন্দী হয়।

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রথমে মক্কা মক্কাবাসীর অত্যাচারে মক্কা ছেড়ে  মদিনা হিজরত করেন। করে সেখানে  গিয়ে বিভিন্ন জাতি ধর্মের  সকলের সাথে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে  মদিনা সনদ তৈরি করে মদিনায় একটি নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন এবং মদিনার সিংহাসনে বসেন। তার নীতি আদর্শ এবং সততার মাধ্যমে অল্প সময়ের মধ্যেই সকলের হৃদয় স্থান করে নেয়। যার ফলে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই ইসলামের পতাকা তলে সুশীতল ছায়া নেওয়ার জন্য মানুষ উৎসাহিত হন। এরপরে নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা হিজরত করার ইচ্ছা পোষণ করেন। মদিনা থেকে  মক্কার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে দ্বিতীয় হিজরির ১৭ ই রমজান নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বদর প্রান্তে পৌঁছলে মক্কার কুরাইশ কাফেররা মুসলমানদেরকে মক্কায়  প্রবেশ করতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। যার ফলে কুরাইস কাফের ও মুসলমানদের মধ্যে বদর প্রান্তে এই যুদ্ধ অনুষ্ঠিত হয়।

এই যুদ্ধে মুসলমানরা বিজয় অর্জন করে। যার ফলে ১৭ ই রমজান দিনটি মুসলমানদের স্বাধীনতা দিবস অথবা বিজয় দিবস হিসেবে পালিত হয়। প্রতিবছর রমজান ১৭ তারিখ বদর দিবস উপলক্ষে কাউখালী উত্তর বাজার বাইতুন নূর জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে  আলোচনা সভার দোয়া ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। উক্ত ইফতার মাহফিলে আজ প্রায় এক হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লী অংশগ্রহণ করে মুসলিম উম্মার জন্য দোয়া ও মোনাজাত করে।

মন্তব্য

সর্বশেষপঠিত

এলাকার খবর

Developed By: Dotsilicon