বিশ্বের সবচেয়ে বড় জ্বালানি তেল রফতানিকারক দেশ সৌদি আরব এশিয়ার ক্রেতাদের জন্য জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে। সেপ্টেম্বরে সরবরাহ করা হবে এমন আরব লাইট তেলের অফিশিয়াল বিক্রয়মূল্য (ওএসপি) বাড়ানো হয়েছে প্রতি ব্যারেলে ৫০ সেন্ট। নতুন মূল্য আঞ্চলিক বেঞ্চমার্কের চেয়ে ৯ দশমিক ৮০ ডলার বেশি।
এর আগে মে মাসে প্রতি ব্যারেল রেকর্ড ৯.৩৫ ডলার দাম ঠিক করা হয়েছিল। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত তেল উত্তোলন ও বিপণন কোম্পানি সৌদি আরামকোর এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে এসব তথ্য। খবর ব্লুমবার্গ। বিবৃতিতে জানানো হয়, আরব লাইট তেলের পাশাপাশি আরব এক্সট্রা লাইট তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ৩০ সেন্ট বাড়িয়ে করা হয়েছে ১০.৯৫ ডলার। আরব মিডিয়াম তেলের দাম ৬০ সেন্ট বাড়িয়ে করা হয়েছে ৭.৭৫ ডলার। এ দুই তেলের দামও রেকর্ড সর্বোচ্চ বাড়ানো হয়েছে। আরামকোর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চলতি আগস্ট থেকে দেশটির জ্বালানি তেলের এশীয় ক্রেতাদের প্রতি ব্যারেল তেলের জন্য অতিরিক্ত ৫০ সেন্ট (হাফ ডলার) বেশি দিতে হবে।
এর আগে এশীয় ক্রেতাদের জন্য ব্যারেলপ্রতি জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির এমন তথ্য নেই। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে সৌদি আরবকে তেল রফতানি বাড়ানোর জন্য তাগিদ দিয়েছে। বিশ্ববাজারে জ্বালানি দাম বাড়তে থাকায় বাজারের সঙ্গে সংগতি রাখতেই এ উদ্যোগ দেশটির সরকার নিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সৌদি ও রাশিয়া নেতৃত্বে থাকা জ্বালানি তেল উৎপাদন ও রফতানিকারক ২৩ দেশের জোট ওপেক প্লাসের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ৩ আগস্ট।
জোটের ভাষ্য, তারা পশ্চিমা চাপের মুখেও জ্বালানি পণ্য সরবরাহ বাড়িয়ে দর কমাতে চায় না। তার এক দিন পরই এশিয়ার জন্য জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় সৌদি আরব। এদিকে, সৌদি আরব ও রাশিয়ার জ্বালানি তেল বাণিজ্যবিষয়ক জোট ওপেক প্লাস থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত জুলাই মাসে সৌদি আরবে জ্বালানি তেলের উৎপাদন কম হয়েছে। সৌদি আরব অন্যান্য বৈশ্বিক ক্রেতার তুলনায় এশীয় ক্রেতাদের ক্ষেত্রে নিজেদের জ্বালানি তেলের দামে কিছুটা ছাড় দেয়।
কিন্তু ওপেক প্লাসের এই বিবৃতির এক দিন পরই তেলের দাম বাড়িয়ে বিবৃতি দিল আরামকো। ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর সামরিক অভিযান শুরুর পর রাশিয়ার জ্বালানি তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্ররা। ফলে বিশ্বজুড়ে বাড়তে থাকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম। গেল মে-জুন মাসে প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুড জ্বালানি দাম হয়েছিল ১৩০ ডলারের কাছাকাছি, যা এখন পর্যন্ত বৈশ্বিক জ্বালানি তেলের বাজারে সর্বোচ্চ দামের রেকর্ড। তবে জুলাই থেকে লিবিয়া জ্বালানি তেলের সরবরাহ বাড়িয়ে দেয়ার ফলে ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে আসতে থাকে জ্বালানি তেলের দাম। গত বুধবার দাম ৪ শতাংশ কমে ১০০ ডলারের নিচে নেমে আসে।
মন্তব্য