সরকার নির্ধারিত লোডশেডিং এর তালিকা এলাকাভিত্তিক প্রণয়ন করা হয়েছে। কিন্তু সরকারের স্বাক্ষরিত এই পদক্ষেপ কে বুড়ি আঙুল দেখিয়ে উৎপাদনের ঘাটতির অজুহাতে দুই ঘন্টার বিপরীতে লোডশেডিং হচ্ছে ৬/৭ ঘন্টা। কোন কোন এলাকা যেমন ভাটি অঞ্চলের তথ্যমতে ১০-১১ ঘন্টা লোডশেডিং হচ্ছে। এ নিয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বলানী মন্ত্রনালয়ে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও কোন সংযোগ পাওয়া যায়নি। বর্তমানে দেশের সিংহভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে দেশের ভিতরেই। যা দিয়ে গত জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত বিদ্যুৎ ঘাটতি মেটানো সম্ভব ছিল। কিন্তু বন্যার কারনে কিছু কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল।
বারবার প্রশ্ন আসছে লোডশেডিং এর প্রদান কারণ বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং উৎপাদনে ঘাটতি। মূলকথা কোন গ্রিডেই বিদ্যুৎ ধরে রাখা যায় না। কিন্তু সরকার বলছে বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে। কিভাবে তবে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়। যদি উৎপাদন না হয়। এ বিষয়ে প্রতিবেদন লেখার পূর্বে দেশের বিভিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্ন করলে তার ফলাফল হিসেবে এসেছে উৎপাদন ও গ্রীডে বিপনন প্রসঙ্গে। কিন্তু দেশের এত বিদ্যুৎ আসলে কোথায় যাচ্ছে। প্রশ্নের উত্তর নেই কোন কতৃপক্ষের কাছে।
অন্যদিকে বিদ্যুতের এই ঘন ঘন লোডশেডিং এর কারণে প্রশ্ন উঠেছে সরকারের উন্নয়ন প্রসঙ্গে। অথচ সরকার একনেকের মাধ্যমে অনেক প্রকল্প নিয়মিত বরাদ্দ করছে। এ নিয়ে জনমনে সংশয় রয়েছে শিশুদের পড়ালেখা এবং মানুষের নিয়মিত ব্যবসায়িক কার্যক্রম নিয়ে। এক গবেষণার ফলাফল বলছে অতি শীগ্রই বাংলাদেশের তেলের সংকট দেখা দিবে। সাথে ডিজেল এবং অন্যান্য ইঞ্জিন চালিত ব্যবহার হওয়া তেল দ্রুত ফুরিয়ে যাওয়ার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এর প্রধান কারণ দেশের সবগুলো বড় প্রতিষ্ঠান এখন জেনারেটর এবং আইপিএসের উপর নির্ভরশীল। এতে করে আগের তুলনায় তেল লাগামহীনভাবে ব্যবহার হচ্ছে। আর এর ফলে বিদ্যুতের পাশাপাশি তেল সংকটের সম্ভাবনা রয়েছে।
নিয়মিত তেলের দাম বাড়ছে। কারণ ক্রেতা বেশি। অন্যদিকে বিদ্যুতের এমন দুরবস্থা অচিরে সমাধান না হলে বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী আগামী দুই মাসের দেশে তেল ও বিদ্যুতের সংকট সৃষ্টি হবে।
সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ১ এর এজিএম মাহমুদুল হাসান যুগের কন্ঠস্বরকে জানান, আমরা যে পরিমানে লোড পাই তাই সরবরাহ করি। এতে আমাদের বিদ্যুৎ সরবরাহ ঘাটতি রয়েছে। কিন্তু ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার শাহজালাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র ‘ কুশিয়ারা পাওয়ার গ্রীড এবং পুরাতন বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদিত বিদ্যুতের ২০ শতাংশ বিদ্যুৎ ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দারা পাওয়ার কথা। অথচ সেই বিদ্যুৎ কোথায় যায় সেই প্রশ্নের জবাব নেই কতৃপক্ষের নিকট।
সিলেট শহরেও একই অবস্থা। মূল গ্রীডে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন রয়েছে। তবুও যেন ইচ্ছের ঘুড়ি হয়ে সরবরাহের ঘাটতি দেখিয়ে বিদ্যুৎ নিয়ে ভেলকিবাজিতে অটল সিলেটের বিদ্যুৎ বিভাগ।
মুহাম্মদ জুয়েল, সিলেট
মন্তব্য