গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বর্তমান মেয়াদে দেশের সকল সেক্টরে ধারাবাহিক উন্নয়নের অংশ হিসেবে দেশের মৎস্য ও প্রানী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এই সেক্টরেও অভূতপুর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। মানুষের দেহের ভিটামিন, আমিষ এবং পুষ্টির চাহিদা মেটানোর জন্য মাছ মাংসের উৎপাদন যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে পাশাপাশি মৎস্য ও পশুপালনের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ গ্রহনের মাধ্যমে একদিকে বিপুল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ বেড়েছে, অন্যদিকে বিভিন্ন ধরনের দেশীয় এবং হাইব্রিড মাছের চাষ বৃদ্ধি, রেনু পোনা উৎপাদনের মাধ্যমে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এই অগ্রযাত্রায় পিছিয়ে নেই কুড়িগ্রাম জেলার মৎস্য চাষি, জেলে এবং উদ্যোক্তারা।
কুড়িগ্রাম জেলার মৎস্য কর্মকর্তা জনাব কালীপদ রায় কুড়িগ্রাম জেলায় গত ২০১৯ সালে যোগদানের পর থেকে তিনি নিজ উদ্যোগে কুড়িগ্রাম জেলা সদরসহ তার আওতাধীন নয়টি উপজেলায় মাঠ পর্যায়ে গিয়ে তিনি সরাসরি প্রান্তিক পর্যায়ের মাছ চাষি, জেলে এবং উদ্যোক্তাদের কাছে তাদের বিভিন্ন সমস্যা এবং সম্ভাবনার কথা শুনে তাদেরকে কুড়িগ্রাম জেলা মৎস্য অফিস কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, পরামর্শ সহ সার্বক্ষণিক বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিয়ে আসছেন। জেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে মৎস্য চাষি, জেলে এবং বিভিন্ন উদ্যোক্তাদের কাছে জানা যায় বিগত দিনে আমাদের অনেক সমস্যা ছিলো যেগুলো প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, পরামর্শ এবং দিকনির্দেশনার অভাবে আমরা মাছ চাষ করে সেভাবে লাভবান হতে পারিনি। কিন্তু গত তিনবছর যাবত কুড়িগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জনাব কালীপদ রায় স্যার আসার পর থেকে আমরা অনেক সুযোগ সুবিধার পাশাপাশি যেকোনো প্রয়োজনে আমরা স্যারের সংগে দেখা বা ফোনে কথা বলে সমস্যার সমাধান করতে পারছি। তিনি ব্যক্তি হিসেবে খুবই ভালো মনের একজন মানুষ এবং মাছ উৎপাদন বৃদ্ধি সহ এলাকার বিভিন্ন খাল খনন, জলাশয়, এবং নদী ও বিলের সংস্কারসহ বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে দিনরাত কাজ করে চলছেন। আমরা চাই কালীপদ স্যারের মত কর্মকর্তা জেলায় থাকলে বর্তমান সরকারের নেয়া সকল উন্নয়ন কর্মসূচি দ্রুত বাস্তবায়ন করে আমারা আবারও মাছে ভাতে বাঙালি এই পরিচয় দিতে পারব।
জেলা মৎস্য অফিস কর্তৃক তথ্য নিয়ে জানা যায় গত তিন অর্থবছরে জেলা মৎস্য অফিস কর্তৃক নেয়া বিভিন্ন প্রকল্প অনুযায়ী জেলা এবং বিভিন্ন উপজেলায় খাল বিল ও পুকুর খনন এবং সংস্কার হয়েছে প্রায় শতাধিক, বিভিন্ন জলাশয় এবং পরিত্যক্ত জলাভূমি সংস্কার করা হয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। এছাড়াও তার উদ্যোগে বিলুপ্ত প্রজাতির দেশীয় মাছের রেনু পোনা উৎপাদন, কুড়িগ্রাম জেলার পানিতে গলদা চিংড়ি মাছ চাষের সম্ভাবনা কে কাজে লাগিয়ে গলদা চিংড়ি চাষ প্রকল্প, প্রশিক্ষণ প্রদান এবং বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছেন। এছাড়াও তিনি দেশীয় মাছ রক্ষার্থে বিভিন্ন সময় মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল, চায়না চায়, রিং জাল সহ বিভিন্ন অবৈধ মাছ ধরার সরঞ্জামাদি জব্দ এবং জরিমানা প্রদান অব্যাহত রেখেছেন। এর পাশাপাশি মৎস্য চাষিদের প্রয়োজনীয় ডাটাবেজ তৈরি, প্রশিক্ষণ প্রদান, সরকারি সহায়তা প্রদানসহ বন্যা এবং প্রাকৃতিক দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ জেলে এবং মাছ চাষিদের আর্থিক সহায়তা প্রদান, মাছের খাদ্য সহায়তা সহ সরকারের নেয়া বিভিন্ন কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করে চলেছেন।
এদিকে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জনাব কালীপদ রায়ের কাছে তার বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানতে চাইলে তিনি জানান আমি ব্যক্তিগতভাবে উত্তর বঙ্গের মানুষ, কুড়িগ্রাম জেলাকে আমি নিজের জেলা মনে করেই এখানে যোগদানের পর থেকে আমি চেষ্টা করছি কুড়িগ্রাম জেলার স্থানীয় মৎস্য চাষ উৎপাদন বৃদ্ধি, দেশীয় মাছ চাষে উদ্বুদ্ধকরন, আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি সহ বর্তমান সরকারের নেয়া বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচি সততার সহিত সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করে এই জেলাকে মাছের পরিপূর্ণ অভয়াশ্রমে পরিনত করা এবং এই জেলার কিছু বিলুপ্ত প্রজাতির দেশীয় মাছ কে পুনরায় ফিরিয়ে এনে মাছের বংশবৃদ্ধি নিশ্চিত করা। তিনি আরও বলেন কুড়িগ্রাম জেলা নদ নদীময় একটি জেলা, এখানে নদ নদীর পাশাপাশি বিভিন্ন খাল বিল জলাশয় রয়েছে যেগুলো সঠিক পরিচর্যা এবং পুনঃখননের মাধ্যমে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি জেলার মাছ চাষে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে। আমরা ইতিমধ্যে যেসব নার্সারি পুকুর খনন, জলাশয় সংস্কার, বরোপিট সহ যেসকল প্রকল্প গ্রহন করেছি তার সুফল ইতিমধ্যে পেতে শুরু করেছে স্থানীয় জনগন এবং মৎস্য চাষি। তিনি আরও বলেন গত ২২ জুলাই থেকে ২৯ জুলাই দেশব্যাপী পালিত হয়েছে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ। আমাদের এবারের প্রতিপাদ্য ছিল” নিরাপদ মাছে ভরব দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ “ এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমান মৎস্য বান্ধব সরকারের গৃহিত বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে আমরা জেলা এবং উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছি প্রান্তিক পর্যায়ে জেলেদের জীবনমান উন্নয়নসহ আগামী দিনে সোনার বাংলা বিনির্মানে সর্বোচ্চ সেবা প্রদানের মাধ্যমে সারা বাংলাদেশ তথা কুড়িগ্রাম জেলাকে মৎস্য উন্নয়নে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে একযোগে কাজ করতে হবে। এ ব্যাপারে স্থানীয় জেলে, মৎস্যচাষী, উদ্যোক্তাসহ রাজনৈতিক ও সামাজিক
গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং গণমাধ্যমের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
মন্তব্য