বিএনপির অনেক নেতা এখনো আওয়ামী লীগে যোগদান করার জন্য অপেক্ষা করে আছে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দরজা খুলে দিলে টের পাবেন’ বিএনপি থেকে কত নেতাকর্মী আওয়ামী লীগে যোগদান করতে লম্বা লাইন ধরে আছে। দরজা খুলে দিলে তখন টের পাবেন।
শনিবার রাজধানীর বিএমএ অডিটোরিয়াম জাতীয় শোক দিবসে উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগারে যখন আটক ছিলেন এবং তাকে ফাঁসি দেওয়া হবে বলে কবর খুরে রাখা হয়েছিল। তখন বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন আমার লাশটা বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিও, কত ভালোবাসা ছিল এদেশের মানুষ প্রতি। সেই নেতার (বঙ্গবন্ধু) হত্যা পরে সমাধিতে ফুল দিতেও পারিনি। এমনকি বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুকালে আমরা যে ডাক (এক সঙ্গে আন্দোলন করবো) দিতে,ব্যর্থ হয়েছি এই আক্ষেপ সারাজীবন থেকে যাবে।
তিনি বলেন, ১৭৫৭ সালের পর ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট বিশ্বাসঘাকতা ছিল সর্বকালের সেরা বিশ্বাসঘাকতা। বিশ্বের সবচেয়ে নিঃস্বতম হত্যাকাণ্ড ছিল ১৫ আগস্ট।
অন্যের হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত থাকে তাদের স্বাভাবিক মৃত্যু হয় না এমন মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত ছিল তাদের অনেকের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি। জিয়াউর রহমানেরও স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি। ১৫ আগস্টে যারা বিশ্বাসঘাতক করেছে তাদেরও স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি। ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ড যারা জড়িত প্রচলিত আদালত এড়িয়ে গেলেও ইতিহাসের আদালত থেকে তারা বাঁচতে পারেনি।
‘জিয়াউর রহমান যদি বঙ্গবন্ধুর হত্যার সঙ্গে জড়িত না থাকতেন তাহলে তাদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলে আবার পুরস্কৃত করলেন কেন। জিয়াউর রহমান নিজে ক্ষমতা দখল করে নিজেই রাষ্ট্রপতি হলেন। ইতিহাসের আদালত নিয়তির বিচার করে।
বিএনপি আওয়ামী লীগকে প্রতিপক্ষে নয় শত্রু মনে করে এ কথা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, যাদের আমরা প্রতিপক্ষ ভাবি তারা আমাদের শুত্রুভাবে। ৭৫ সালের বঙ্গবন্ধুকে হত্যা পরে তাদের ভূমিকা ছিল? এসব বিষয় দেশের মানুষ ভুলে যায়নি। তারপরও বিএনপি রাজনৈতিক সম্পর্কের মধ্যে
বারবার দেয়াল তুলছে। তারা রাজনৈতিক সম্পর্ক নষ্ট করে দিয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেনের বির্তকিত মন্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর আর্দশ ধারণ করি। এটাই আমাদের বড় অস্ত্র। আমাদের ক্ষমতা উৎসব জনগণ। ক্ষমতায় বসিয়ে দেওয়ার জন্য কাউকে অনুরোধ করিনি।
বিদেশে আমাদের বন্ধুত্ব আছে, কোনো প্রভু নেই। আমরা কারো দয়ায় ক্ষমতায় আসিনি। দেশের জনগণ আমাদের সর্মথন করেছে ভোট দিয়েছে, আল্লাহ তাআলার রহমত আছে, তাই ক্ষমতায় এসেছি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরদের কোনো জনপ্রিয়তা নেই উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, সারা দুনিয়া প্রমাণ করে শেখ হাসিনারর জনপ্রিয়তা আছে।
আপনারা বহুবার আন্দোলনের ডাক দিয়েও জনগণ থেকে সাড়া পাননি (বিএনপি)। নির্বাচন আসলে টের পাবেন, শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা কত তুঙ্গে। এখনো বিএনপি বহু নেতা আওয়ামী লীগে যোগদান করতে অপেক্ষায় আছে। আওয়ামী লীগ দরজা খুলে দিলে টের পাবেন বিএনপি নেতাদের যোগদানের লাইন কত লম্বা! আমরা জনগণের সঙ্গে আছি, মানুষের সঙ্গে আছি। আমাদের কোনো বিদেশি প্রভু নেই।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন ডা. কামরুল হাসান মিলন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক ডা. রোকেয়া সুলতানা, বিএমএ এর সাবেক সভাপতি অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়াসহ অনেকেই।
মন্তব্য