রাজধানীর শাহজাহানপুর, মতিঝিল, মুগদা ও তেজগাঁও থেকে অজ্ঞান পার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের ৩৭ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) -৩ । তাদের কাছ থেকে বিষাক্ত মলম ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৩ অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, র্যাব-৩ এর একটি দল শনিবার রাতে রাজধানীর শাহজাহানপুর, মতিঝিল, মুগদা ও তেজগাঁওয়ে অভিযান চালিয়ে করে ৩৭ জনকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তাররা হলেন, মিজানুর রহমান (২১), মো. সোহেল (২০), মাসুদ রানা (২১), সাব্বির (২২), আবু বকর সিদ্দিক (২২), শাকিল (২০), নাঈম মোল্লা (২০), মো. সালমান (২৬), জালাল হোসেন (২১), মো. শাওন (২২), শহিদুল ইসলাম (৪০), মো. রফিক (৩৩), আজিজুর (৩৬), সৈকত মন্ডল (১৯), আরিফ গাজী (২৬), মো. জনি (১৮), মো. রুবেল (২৮), মো. আফজল (১৮), দ্বীন ইসলাম (২৩), মো. তুহিন (১৮), রবিউল আউয়াল হৃদয় (২২), আরমান (২২), সানোয়ার হোসেন (৩১), মো. রুবেল (৩৪), মো. সোহেল (৩৫), মো. শান্ত (২৫), মো. আজাদ (৩৫), মো. আকাশ (২২), নাইম খান (১৬), আপন মিয়া (২০), নাজমুল হোসেন (২৮), মাসুম মিয়া (২৮), মো. শান্ত (২০), সোহেল মাতব্বর (২৩), হৃদয় (১৯), সোহরাব (১৯) ও ইয়াছিন ব্যাপারী (২২)।
গ্রেপ্তারকালে তাদের নিকট থেকে ১২টি মোবাইলফোন, তিনটি সুইচ গিয়ার, তিনটি অ্যান্টি কাটার, ১২টি ব্লেড, একটি কাঁচি, ছয়টি চাকু, তিনটি ক্ষুর, সাতটি বিষাক্ত মলমের কৌটা, দুটি বিষাক্ত স্প্রে এবং নগদ আট হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
র্যাব-৩ সিও লে. কর্নেল আরিফ বলেন, গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, রাজধানীর বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন এলাকায় ছিনতাইকারী সদস্যরা ঘোরাফেরা করতে থাকেন। সহজ সরল যাত্রীদের টার্গেট করে দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এবং বিষাক্ত চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ানোর চেষ্টা করেন।
বিষাক্ত পানীয় সেবন করার ফলে বা বিষাক্ত স্প্রের ঘ্রাণে অজ্ঞান হয়ে পড়া যাত্রীদের সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে ভিড়ের মধ্যে মিশে যান ছিনতাইকারীরা। এ ছাড়া কখনো ভিড়ের মধ্যে যাত্রীদের চোখে-মুখে বিষাক্ত মলম বা মরিচের গুঁড়া বা বিষাক্ত স্প্রে করে সর্বস্ব কেড়ে নেন।
অনেক সময়ে ভুক্তভোগীদের পরিবারের সদস্যরা সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্যে পড়েন। তারা স্বজনদের খোঁজে দিশাহারা হয়ে দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন। ভুক্তভোগীরা ছিনতাইকারী সদস্যদের খুব কম ক্ষেত্রেই শনাক্ত করতে পারেন।
র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারীরা রাজধানীর বিভিন্ন অলি-গলিতে ওত পেতে থাকে। সুযোগ পাওয়া মাত্রই তারা পথচারী, রিকশা আরোহী, যানজটে থাকা সিএনজি, অটোরিকশার যাত্রীদের ধারালো অস্ত্র প্রদর্শন করে সর্বস্ব লুটে নেয়। সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত তুলনামূলক জনশূন্য রাস্তা, লঞ্চঘাট, বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন এলাকায় ছিনতাইকারীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তাদের ছিনতাইকাজে বাধা দিলে তারা নিরীহ পথচারীদের আঘাত করতেও দ্বিধা বোধ করে না।
রাজধানীর খিলগাঁও, মালিবাগ রেলগেট, দৈনিক বাংলা মোড়, পীরজঙ্গি মাজার ক্রসিং, কমলাপুর বটতলা, মতিঝিল কালভার্ট রোড, হাতিরঝিল, শাহবাগ, গুলবাগ, রাজউক ক্রসিং, পল্টন মোড়, গোলাপ শাহ মাজার ক্রসিং, হাইকোর্ট ক্রসিং, আব্দুল গণি রোড, মানিকনগর স্টেডিয়ামের সামনে, নন্দীপাড়া ব্রিজ, বাসাবো ক্রসিং এলাকায় সন্ধ্যা থেকে ভোর রাত পর্যন্ত ছিনতাইকারীদের তৎপরতা বেশি পরিলক্ষিত হয়। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান র্যাবের এ কর্মকর্তা।
নিজস্ব প্রতিবেদক
মন্তব্য