নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেছেন, দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সকলকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলেছেন। আরে আমাদের পুর্ব পুরুষেরা রক্ত দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। এখন দেশ আবারো বিপদে, রক্ত তো আমাদের দিতেই হবে। গত কয়েকদিন ধরে নারায়ণগঞ্জে বিএনপি, অনেক সুশিল বলছে নারায়ণগঞ্জের রাজপথ দখল করতে হবে। আরে দেখেন না এই নারায়ণগঞ্জের রাজপথ কার দখলে। নারায়ণগঞ্জের রাজপথ শেখ হাসিনার দখলে।
শনিবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে নগরীর ২নং গেট এলাকায় আয়োজিত বিশাল সমাবেশে শামীম ওসমান এ কথা বলেন।
শামীম ওসমান বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেবরা হেসে হেসে বলেন আওয়ামী লীগের কপালে নাকি শনি আছে। কেন? বাংলাদেশ নাকি শ্রীলঙ্কা হবে। আরে বাংলাদেশ দেউলিয়া হলে আপনাদের খুশি হওয়ার তো কোন কারন নাই। এই বিষয়ে তারাই খুশি হচ্ছে যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা মেনে নিতে পারে নাই। যারা ১৫ আগস্টে জাতির পিতাকে তার পরিবারসহ নির্মমতার সাথে হত্যা করেছে। যারা আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে ২১বার হত্যা করার চেষ্টা করেছে। তারাই আজ দেশকে দেউলিয়া হিসেবে দেখতে চায়।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা আমাদের ভবিষ্যত না। আমাদের ভবিষ্যৎ তো ছিলো বঙ্গবন্ধু। তাকে হত্যা করে আমাদের স্বপ্ন গুলোকে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এখন শেখ হাসিনা আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ, তাকে হত্যা করে আমাদের বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করতে চাচ্ছে। সামনে কঠিন সময় আসছে। এখন যে চক্রান্ত হচ্ছে তা শুধু আওয়ামী লীগকে হাটানোর জন্য না। এই ষড়যন্ত্র হচ্ছে আমাদের এই দেশকে অকার্যকর ও ব্যর্থ একটি রাষ্ট্রে পরিনত করার জন্য।
শামীম ওসমান বলেন, আপনারা খেলতে চান? আমরাও খেলতে চাই। আপনারা খেলবেন স্বাধীনতার বিরুদ্ধে, আমরা খেলবো বাংলাদেশের পক্ষে। যে দেশে হিন্দু, মুসলমান, বোদ্ধ কোন ধর্মের ভেদাভেদ নাই। সারা দেশে অশান্তি করে লাভ নাই, নারায়ণগঞ্জেই খেলবো। লন্ডন থেকে নির্দেশ আসছে আপনারা লাফাচ্ছেন। এভাবে লাফাইয়েন না। খালেদা জিয়ার শরীর অনেক খারাপ। কই ওই লন্ডনে বসে নির্দেশ দেয়া লোকটি তো একবারো আসছেন না। আচ্ছা উনি হয়তো দেশে আসতে পারবে না, আইসেন না। ওনার বউ, ওনার মেয়ে? তারা তো আসতে পারতেন। তারাও তো আসলেন না। যারা তার কথায় নাচ্ছেন, বলছেন এক মারবেন ওকে মারবেন। যে তার মায়ের জন্য আসছে না, সে আপনাদের প্রয়োজনে কি আসবে।
তিনি বলেন, আমরা টাকার পাহারও দেখেছি। আবার দুই বেলা না খেয়েও থেখেছি। কলেজের বেতন অব্দি দিতে পারি নাই। আমার মেঝো ভাই সেলিম ওসমানকে ধরে নিয়ে গেলে, বুকের মধ্যে আগুন দিয়ে ৪২টা ছেকা দেয়া হলো। ১৯৭৫ এর ১৫ই আগস্ট আমার বড় ভাই নাসিম ওসমানের বৌ ভাত ছিলো। সেদিন যখন বঙ্গবন্ধুর হত্যা করা হলো, আমার মা তার সকল গয়না আমার বড় ভাইয়ের হাতে তুলে দিলো। আমার বড় ভাই ওই রাতেই বেড়িয়ে পরলেন বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিশোধ নিতে।
তিনি বলেন, আরে ঢাকায় খেলবেন। আমরা কি হাতে চুরি পরে আছি, নাকি কানে দুল পরে আছি। আরে ঢাকায় গিয়ে আমাদের মহিলারাই আপনাদের সাথে খেলতে যথেষ্ট। ২০২৪ এ যে বাবার হাতে পায়েই ধরেন, বাইরে থেকে টাকা পাঠান, ইনশাআল্লাহ ইনশাআল্লাহ ইনশাআল্লাহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই হবে। যারা যারা বলেন নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ নাই। আগে খারাপ লাগতো, এখন লাগে না। কারন যারা বিরোধী তারাও গালি দেয় যারা পক্ষের তারাও গালি দেয়।
তিনি বলেন, যারা দুই দিক থেকে খেলেন তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, যাখন ছেলেরা জয় বাংলা বলে স্লোগান দেয়, তখন আমার বয়স হয়ে যায় ১৬। একবার যদি আমি মনে করে ফেলি যে আমার বয়স ১৬, তাহলে কিন্তু আপনাদের অবস্থা গোল্ল গোল্ল হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, আমার দলের কিছু নেতারা মুসুল্লিদের কিছু একটা বলেছে, আমি শুনেছি। আমি সেই সকল মুসুল্লি ভাইদের কাছে ওই আওয়ামী লীগ নেতাদের পক্ষ থেকে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছে। আশা করি আপনারা ক্ষমা সুন্দর সৃষ্টিতে দেখবেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি চন্দনশীল, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহিদ মো. বাদল, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক এড. শামসুল ইসলাম ভুইয়া, সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফ উল্লাহ বাদল, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ও সোনারাগঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু জাফর চৌধুরী বিরু, পিরোজপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও সোনারাগঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিএম আরমান, সাংগঠনিক সম্পাদক এড. মাহমুদা মালা, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন মিয়া, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, নারায়ণগঞ্জ আদারতের সাবেক পিপি ওয়াজেদ আলী খোকন, জেলা শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক আব্দুল কাদির, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদত হোসেন ভুইয়া সাজনু, নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হোসেন নিপু, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও তোলারাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাফায়েত আলম সানি, মহানগর সাবেক সহ সভাপতি শাহরিয়ার রেজা হিমেল, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম রাফেল, মহানগর ছাত্রলীগ নেতা হাসনাত রহমান বিন্দু প্রমুখ।
উক্ত সমাবেশে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখো নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগন অংশগ্রহন করেন।
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি, মোঃ ইমরান হোসেন তালহা
মন্তব্য