মাদকের ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার (এসপি) গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেছেন, মাদকের ব্যাপারে কিন্তু আমাদের জিরো টলারেন্স জারি আছে। যদি আমি কোনদিন প্রমাণ পাই আমার কোন পুলিশ সদস্য এসব ঘটনার সাথে জড়িত, তাহলে তাদের চাকরি থাকবে না। আমি প্রত্যেকটা পুলিশ লাইন্স ও থানায় গিয়েছি। তাদের উদ্দেশ্যে আমি একটা কথাই বলবো। এই মাদক সেবন করা, বিক্রি করা ও বিক্রেতাকে সহায়তা করা বড় অপরাধ। আর এই অপরাধীদের কোন মাফ নেই। আমি আপনাদের গ্যারান্টি দিয়ে বলছি- মাদকের ব্যাপারে আমরা কাজ করব। হয়তো নতুন এসেছি, ইনশাআল্লাহ আপনারা রেজাল্ট পাবেন।
সোমবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে জেলা পুলিশ কার্যলয়ের সম্মেলন কক্ষে নারায়ণগঞ্জ সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দের সাথে এক মতবিনিময় সভা তিনি এসব কথা বলেন।
আর কিশোর অপরাধের বিষয়ে এসপি বলেন, কিশোর গ্যাং অলরেডি কাজ শুরু হয়েছে। এর আগে আমি সাংবাদিক ভাইদের সাথে বসেছিলাম, আমাদের বিট পুলিশিংয়ের সময় প্রত্যেকটা বিটে বিটে আমি কিশোর গ্যাং এর সংখ্যা জানবো। কোন এলাকায় কিশোর গ্যাং আছে, এই পরিসংখ্যান টা আগে আমার জানা দরকার। ইতিমধ্যেই আমি আমার বিটের অফিসারদের কাছে এ পরিসংখ্যানটা আমি চেয়েছি। এটা হাতে পেলেই ইনস্ট্যান্ট অপারেশনের নামবো। এটা আমি আপনাদের মাধ্যমে সারা নারায়ণগঞ্জবাসীকে জানাতে চাই, তখন যদি কেউ তদবির করেন আর যদি আমি দেখি সে প্রকৃত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য এবং অপরাধী। তা হলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
ট্রাফিক, যানজট, বাসস্ট্যান্ডের বিষয়ে তিনি বলেন, যেটা আপনারা বলেছেন। আমরা মনে করি ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও যানজট নিরসনে পুলিশ একটা স্টেপ নেবে। তবে বিআরটিএ, শ্রমিক ইউনিয়ন, সিটি কর্পোরেশন সহ অন্যান্য যারা আছে তাদের সবার সাথে বসে আমরা একটা সমাধান বের করার চেষ্টা করব। আমার মনে হয়, এটা বেস্ট হবে। কারণ আমি চাইলেই একটা সিদ্ধান্ত দিতে পারি না। আর আমি একা সিদ্ধান্ত দিয়ে দিলাম, সেটা বাস্তবায়নে কোন লাভ হবে না। যদি সবাই মিলে আমরা একটা সিদ্ধান্তটা নেই, তাহলে সেটা বাস্তবায়ন হবে এবং এটা ট্রাফিক পুলিশ সহ সবার পক্ষে ব্যাপারটা ইজি হবে।
তিনি বলেন, আমি একটা জিনিস লক্ষ্য করেছি ঢাকা মহানগরের কিন্তু হিউজ যানজট। এখানেও যানজট। এর কারণ যত পরিমাণ গাড়ি এখানে চলে, সে পরিমাণ কিন্তু রাস্তা নেই। আমার কাছে মনে হয়েছে, রাস্তা-ঘাট যদি আরো কিছু করা যেত তাহলে যানজট কিছুটা হলেও কমানো সম্ভব হতো।
তিনি আরও বলেন, সারা বাংলাদেশের যেটা হয়েছে। মানুষ তার জীবিকা নির্বাহের কারণে চালায় রিক্সা, আর রিক্সা থেকে এখন রূপান্তর হয়েছে অটোরিকশা। আর এটা এমনভাবে হয়েছে, যে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় যে এটা হয়েছে তাও না৷ আবার রাষ্ট্র তাদের নির্মূল করে উচ্ছেদ করে ফেলবে তাও না । কারণ এখানে অনেক মানুষের আয়ের পথ জড়িয়ে আছে। তাই আমার কাছে মনে হয়েছে আমরা সবাই যদি একসাথে বসে কিভাবে এটা সমাধান করা যায় এটা খুঁজে বের করি তাহলে সেটা মনে হয় ভালো হবে।
নারী শ্রমিকদের ব্যপারে তিনি বলেন, পুলিশের কাজ হচ্ছে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া। কিন্তু মালিকদেরও দায়িত্ব যেই গার্মেন্টস্ ফ্যাক্টরিতে যে শ্রমিক কাজ করে তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা। অন্য কোন পুরুষ শ্রমিক দ্বারা যাতে সে ইভটিজিংয়ের শিকার না হয়, নির্যাতনের শিকার না হয়।
গার্মেন্টস্ মালিকদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, যদি কোন সময় কেউ মহিলা শ্রমিকদের ইভটিজিং ও নির্যাতনের কারণ হয়ে দাঁড়ায় সাথে সাথে আমাকে জানাবেন। অনেক জিনিস তো আমার না জানা থাকলে ব্যবস্থা নিতে পারব না। আমাকে জানানোর পরে এবং আমার পুলিশ প্রশাসনকে জানানোর পরে। যদি আমি হেল্প না করি। সে দায় আমার। তখন আপনারা আমাকে দোষারোপ করবেন। কিন্তু আগে আমাকে জানাতে হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই, জেলা পরিষদের প্রশাসক আনোয়ার হোসেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি চন্দন শীল, নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের অফিস সেক্রেটারি মোহাম্মদ কামাল হোসেন ( সম্পাদক লাইভ নারায়ণগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের পক্ষ থেকে আরও উপস্থিত ছিলেন দৈনিক সবার কন্ঠ পত্রিকার সম্পাদক ফয়েজউদ্দিন আহমদ লাভলু, নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রসাশন ও অর্থ) মো. জাহেদ পারভেজ চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) মো. আমীর খসরু, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোহাম্মদ শফিউল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) মো. তরিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রসিকিউশন) শাওন শায়লা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. সোহান সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) মোহাম্মদ নাজমুল হাসান, সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (সি সার্কেল) আবির হোসেন, উপ-পুলিশ পরিদর্শক (ইনচার্জ, আইসিটি এন্ড মিডিয়া) হাফিজুর রহমান প্রমূখ।
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: মোঃ ইমরান হোসেন তালহা
মন্তব্য