দীর্ঘ দুই দশক বিদেশে পালিয়ে থাকা নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খানের অস্ত্র মামলায় একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিভানা খায়ের জেসী এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এদিন ভাটারা থানার অস্ত্র মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা ওই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রিয়াদ আহমেদ জাকির খানের তিনদিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গত শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর একটি এলাকা থেকে বিদেশি পিস্তলসহ জাকির খানকে গ্রেফতার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১১)। গত শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা বলেন, জাকির খানের বিরুদ্ধে চারটি হত্যাসহ অসংখ্য মামলা রয়েছে। এর আগে বিভিন্ন সময়ে তিনি এসব মামলায় জেল খাটেন। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তিনি আরও দুর্ধর্ষ হয়ে ওঠেন। এ সময় তিনি নারায়ণগঞ্জের দেওভোগ এলাকায় বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী ও মাদকের সম্রাজ্য গড়ে তোলেন। এক পর্যায়ে দেওভোগ এলাকার অপর শীর্ষ সন্ত্রাসী দয়াল মাসুদকে শহরের সোনার বাংলা মার্কেটের পেছনে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে শহরের ত্রাস হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন। সর্বশেষ ২০০৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি বিকেএমইএ’র সহ-সভাপতি সাব্বির আলম খন্দকার হত্যাকাণ্ডের পরে তিনি দেশ ছেড়ে থাইল্যান্ডে পাড়ি জমান। এ সময়ে বিভিন্ন মামলায় বিজ্ঞ আদালতে জাকির খানকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা দেন। এরপর থেকেই গ্রেফতার এড়াতে তিনি দেশের বাইরে অবস্থান করছিলেন। র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জাকির খান জানান, তার বিরুদ্ধে ১৯৯৪ সালে সন্ত্রাসমূলক অপরাধ দমন বিশেষ আইনে মামলা দায়ের হয়। ওই মামলায় তার ১৭ বছরের সাজা হয়। পরে উচ্চ আদালতে তার সাজা কমে ৮ বছর হলেও তিনি গ্রেফতার এড়াতে দেশে-বিদেশে প্রায় ২১ বছর পলাতক ছিলেন। মূলত ২০০৩ সালে সাব্বির আলম হত্যা মামলায় আসামি হলে তিনি আত্মগোপনে চলে যান। জিজ্ঞাসাবাদে জাকির খান আরও জানান, তিনি দীর্ঘদিন থাইল্যান্ডে আত্মগোপনে ছিলেন। সম্প্রতি ভারত হয়ে তিনি বাংলাদেশে আসেন। এরপর থেকে তিনি পরিচয় গোপন করে ঢাকার একটি এলাকায় সপরিবারে বসবাস করছিলেন।
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: মোঃ ইমরান হোসেন তালহা
মন্তব্য