লেবাননে ব্যাংক ডাকাতির হিড়িক পড়েছে। তবে এই সশস্ত্র ‘ডাকাতরা’ ব্যাংক থেকে অন্য কারো অর্থ নয় বরং নিজেদের সঞ্চিত অর্থ দাবি করছে। বিচারের পরিবর্তে এই ব্যাংক ডাকাতদের অনেকাংশে মুক্ত থাকতে দেওয়া হচ্ছে এবং তারা সমাজের নায়ক হয়ে উঠছেন। লেবাননের অর্থনৈতিক সংকট অব্যাহত থাকায় এ ধরনের ঘটনাগুলো সাধারণ হয়ে উঠেছে। মার্কিন ডলারের তুলনায় স্থানীয় মুদ্রা লেবানিজ পাউন্ডের ৯০ শতাংশের বেশি অবমূল্যায়ন ঘটেছে। মানুষ তাদের নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে কী পরিমাণ অর্থ তুলতে পারবে তার উপর সরকারের বিধিনিষেধও পরিস্থিতিকে আরও প্রকট করেছে।
আল জাজিরার প্রতিনিধি জেইনা খোদর বলেছেন, ‘যতবার আপনি অর্থ তুলতে যাবেন ততবার তা বাজার মূল্যের চেয়ে অনেক কম হারে হবে। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি ৭০০ ডলার তুলতে চান, তারা আপনাকে ২০০ ডলার দেবে।’ গত জানুয়ারি মাসে প্রথম নিজের বিদেশি মুদ্রা ব্যাংক থেকে তুলতে গিয়ে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছিল। পূর্ব লেবাননের ওই ব্যক্তিকে প্রথমে বলা হয়েছিল, তিনি তার বৈদেশিক মুদ্রা সঞ্চয় তুলতে পারবেন না। এ সময় তিনি অস্ত্রের মুখে কয়েক জনকে জিম্মি করেন। পরে তাকে কিছু অর্থ দেওয়া হলে তিনি নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন।
আগস্টে বৈরুতের একটি ব্যাংক থেকে বাবার চিকিৎসার জন্য নিজের সঞ্চিত ২০ হাজার ডলার থেকে ১৩ হাজার ডলার তুলতে গিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। যথারীতি তাকে প্রত্যাখ্যান করা হলে তিনি অস্ত্রের মুখে গ্রাহকদের জিম্মি করে রাখেন। ব্যাংকের বাইরে উল্লসিত জনতা তাকে সমর্থন জুগিয়ে যাচ্ছিল। গত বুধবার আরেকজন সশস্ত্র ব্যক্তি লেবাননের পাহাড়ি শহর আলেতে ব্যাংকমেডের একটি শাখায় প্রবেশ করে তার সঞ্চিত অর্থ তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেন। একই দিন, সালি হাফিজ নামে একজন নারী খেলনা বন্দুক নিয়ে বৈরুতে বিএলওএম ব্যাংকের শাখায় প্রবেশ করেন। তিনি তার ক্যান্সারে আক্রান্ত বোনোর জন্য নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ তুলতে চেয়েছিলেন। একপর্যায়ে ওই নারী ব্যাংকের ভিতরে পেট্রল ঢেলে দেন এবং তার সঞ্চিত অর্থ ফেরত না পেলে আগুন লাগানোর হুমকি দেন। শেষ পর্যন্ত তার ২০ হাজার ডলার আমানতের মধ্যে ১৩ হাজার ডলার পেতে সক্ষম হন।
মন্তব্য