সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন অফিস-দপ্তরে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সংসদীয় কমিটি। কেন এসব অফিস বিদ্যুৎ বিল দিনের পর দিন পরিশোধ করছে না- তাদের এনার্জি অডিট করে তথ্যাদি জানাতে বলেছেন কমিটির সদস্যরা।
এছাড়া নতুন সংযোগ দেবার ক্ষেত্রে বিদ্যুৎসাশ্রয়ী যন্ত্র ও উপকরণের ব্যবহার বিষয়েও নির্দেশনা দিয়েছে সংসদীয় কমিটি।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব সুপারিশ করা হয়। বৈঠকে দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া, ডিজেলচালিত সেচযন্ত্রের পরিবর্তে সৌরসেচের ব্যবহার বাড়ানো এবং বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থায় সিস্টেম লস শূন্যের কোটায় আনতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রিপেইড মিটার বসাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করে সংসদীয় কমিটি।
বৈঠকে জানানো হয়, সরকারি, আধা সরকারি, বেসরকারি ও প্রাইভেট সংস্থায় বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ও রয়েছে। সব চেয়ে বেশি বকেয়া রয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ৩২৩ কোটি ৪০ টাকা আর সবচেয়ে কম বকেয়া রয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়ে মাত্র ২ হাজার টাকা।
বিদ্যুৎ বিল বকেয়ার দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ১৪২ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয় ১২৮ কোটি ৩ লাখ ৮৬ হাজার টাকা।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে ৭৮ কোটি ১৬ লাখ ৩ হাজার টাকা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ৬২ কোটি ৪ লাখ ৯৬ হাজার, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে ৪৯ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার টাকা।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে ২৭ কোটি ১১ লাখ ৬ হাজার টাকা, আইন ও বিচার মন্ত্রণালয় ৬ কোটি ৯ লাখ ৯৫ হাজার টাকা, ভুমি মন্ত্রণালয় ১০ কোটি ৩ লাখ ৯২ হাজার টাকাসহ ৪০টি মন্ত্রণালয়ের কাছে মোট ৬৪২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে।
এছাড়া সরকারি সংস্থার কাছে ৬৪২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা, আধা সরকারি/বেসরকারি সংস্থা ৭৬৩ কোটি ৯০ লাখ, প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের কাছে ৫ হাজার ৪৭৬ কোটি ৬ হাজার টাকা বকেয়া রয়েছে।
বৈঠকে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের ২০২০-২১ অর্থবছরের আয়-ব্যয় সম্পর্কে, বৈশ্বিক জ্বালানি সংকট ও ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদার প্রেক্ষিতে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থায় প্রিপেইড মিটার বসানোর সুপারিশ করা হয়।
কমিটি সভাপতি ওয়াসিকা আয়শা খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটি সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, আবু জাহির, আলী আজগর, আছলাম হোসেন সওদাগর, মোছাঃ খালেদা খানম এবং নার্গিস রহমান অংশ নেন।
মন্তব্য