বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
 

অব্যবস্থাপনায় বাহাদুর শাহ পার্ক, বিড়ম্বনায় পথচারীরা

কণ্ঠস্বর ডেস্ক, ঢাকা
প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

 ছবি: দৈনিক যুগের কণ্ঠস্বর

জবি প্রতিনিধিঃ সাকেরুল ইসলাম,

 

পুরান ঢাকার সদরঘাট এলাকায় অবস্থিত বাহাদুর শাহ পার্ক। ব্যস্ততম ঢাকা শহরের মানুষের যেন একটুখানি স্বস্থির নিঃশ্বাস এই পার্ক ঘিরে। কিন্তু এই স্থানটি এখন মানুষের জন্য অস্বস্থির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চারপাশে বিভিন্ন ধরনের অস্থায়ী খাবার দোকান, হকার, রিক্সার জট এবং সদরঘাটগামী বিভিন্ন পরিবহনের যাত্রী ওঠানামা সহ সব মিলিয়ে মানুষের বিশ্রামের জায়গাটি এখন হয়ে ওঠেছে বিড়ম্বনার জায়গা।

জানা যায়, একসময়ের আন্টঘর নামে পরিচিত বাহাদুর শাহ পার্ক ১৮৫৮ সালে ভিক্টোরিয়া পার্ক নামে পরিচিত লাভ করে। পরে ১৯৫৭ সালে (মতান্তরে ১৯৬১) সালে সিপাহী বিদ্রোহের একশত বছর পূর্তিতে এই বিদ্রোহের বিপ্লবীদের আত্মত্যাগকে স্মরণীয় করে রাখতে এর নতুন নাম দেওয়া হয় বাহাদুর শাহ পার্ক।

বাহাদুর শাহ পার্কের আশপাশ ঘিরেই আছে একটি পাবলিক বিশ্বিবদ্যালয় সহ কয়েকটি কলেজ। এছাড়াও রয়েছে সেন্ট গ্রেগরি উচ্চ বিদ্যালয় ও ঢাকা গভ. মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের মত ঐতিহ্যবাহী ও বিখ্যাত মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের অধ্যয়নরত শতশত শিক্ষার্থীদের সমাগমস্থল ছাড়াও সদরঘাট থেকে ঢাকা ও ঢাকা থেকে সদরঘাটগামী যাত্রীদের চলাচলে মুখরিত থাকে বাহাদুর শাহ পার্ক এলাকা।

পার্ক এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, চারপাশে অস্থায়ীভাবে বসানো বিভিন্ন খাবারের দোকান। আর এসব খাবারের দোকানের উচ্ছিষ্ঠ যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে যার দুর্ঘন্ধে পথচারীদের চলাফেরা সমস্যা সৃষ্ঠি করছে। এছাড়াও বাহাদুর শাহ পার্কের পূর্বপাশে পাবলিক টয়লেট থাকলেও এর পাশেই পার্কের দেওয়াল ঘেঁষেই রয়েছে উন্মুক্ত শৌচাগার। যার দুর্ঘন্ধে এর পাশ দিয়ে চলাচল অসম্ভব হয়ে দেখা দিয়েছে। তার উপর আরো আছে অসংখ্য ছিনতাইকারী যারা ভিক্ষুকের বেশ ধরে ঘুরে বেড়ায়। আর সুযোগ পেলেই পথচারীদের সর্বস্বান্ত করে দেয়।

প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা বিভিন্ন বয়সী লোকজনের সরব উপস্থতি চোখে পড়ার মত। একটু অবসর পেলেই চলে আসেন পার্কে, এমনই একজন শাহজাহান মোল্লা। সত্তোর্ধ এই প্রবীণ বলেন, একসময় এর অবকাঠামো এতবেশী উন্নত না থাকলে ও তখন এখানে একটা নিরিবিলি ও শান্তিময় পরিবেশ ছিল। কিন্তু এখন গাড়ীঘোড়া বেড়েছে, ঢাকা শহরের মানুষ বেড়ে গেছে। এখন আগের সে পরিবেশ আর নেই।

কবি নজরুল সরকারী কলেজর শিক্ষার্থী রবিউল আলম বলেন, প্রতিদিন ক্লাস শুরুর আগে পার্কে বসে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেই, কিন্তু চারপাশে হকারদের চিৎকার আর মোটর গাড়ীর উচ্চ আওয়াজের হর্ণ এখানে বসে থাকাই দায় হয়ে পড়ে।

পথচারী ও স্থানীয়দের এত অভিযোগ সত্ত্বেও কোন সমাধান না হওয়ায় অনেকে প্রশাসন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অবহেলাকে দুষছেন। সকাল বেলা পাতঃভ্রমণকারী কিশোর দাস বলেন, এখানে দিন দিন হকার ও ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য বেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু প্রশাসন কার্যকর কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তারা দেখেও না দেখার ভান করে আছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোতোয়ালি থানার এসআই (তদন্ত) নাহিদুল ইসলাম জানান, আমার জানা মতে বাহাদুর শাহ পার্কে কোন টং এর দোকান নেয়। আমাদের উচ্ছেদ অভিযান চলে এবং এ রকম দোকান দেখলে আমরা তাৎক্ষণিক উচ্ছেদ করি।

মন্তব্য

পঠিতসর্বশেষ

এলাকার খবর

Developed By: Dotsilicon