বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ জহরুল ইসলাম,
২০০১ সালের ৮ জুলাই জাতীয় সংসদে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ আইন পাসের মাধ্যমে জাতির পিতার জন্মভূমি গোপালগঞ্জে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে বশেমুরবিপ্রবি। অন্যদিকে গত ২৯ মার্চ জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় পিরোজপুর বিল-২০২২ এবং সম্প্রতি পিরোজপুরের এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ভিসি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী সাইফুদ্দীন।
ফলাফলস্বরূপ বর্তমানে আনুষ্ঠানিকভাবেই চলছে একই নামে দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম, যার একটি হলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি) গোপালগঞ্জ এবং অপরটি হলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়,(বশেমুরবিপ্রবি) পিরোজপুর।
আর এই একই নামে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় চালু হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন গোপালগঞ্জের বশেমুরবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা। সিএসই বিভাগের এস,এম, শামীম বলেন, “একই নামে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় হলে শিক্ষার্থীরা চাকরি বা বিভিন্ন ক্ষেত্রে তারা ভোগান্তির শিকার হবে। শিক্ষার্থীরা সহজে তার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়কে নির্চাবন করতে পারবে না। এক্ষেত্রে বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি হবে।”
ইতিহাস বিভাগের শাকিল গাজী বলেন,“দুই বিশ্ববিদ্যালয় একই নামে হওয়ার কারণে আমরা আমাদের পরিচয় নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগবো। তখন কেউ আর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ব্যবহার করবে না জেলার নাম ব্যবহার করবে।”
তবে একই নামে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সমস্যা হবে না বলে মনে করছেন বশেমুরবিপ্রবি, পিরোজপুরের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী সাইফুদ্দীন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমেরিকায় একটি স্টেটের নাম রয়েছে ক্যালিফোর্নিয়া, সেখানে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া নামে নয়টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, যেমন: ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া (সান্তা বারবারা), ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া (লস অ্যাঞ্জেলস), ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া (সান ফ্রান্সিসকো)। তাদেরতো সমস্যা হচ্ছে না, অতএব বাংলাদেশেও সমস্যা হবে না।’
এ বিষয়ে বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্য একিউএম মাহবুব বলেন, ‘এগুলি আমাদের এখতিয়ারে নাই,এটা মন্ত্রণালয়ের ব্যাপার,পিএম দপ্তর, শিক্ষা মন্ত্রণালয়,সচিবলয়,এরাই এগুলি ঠিক ঠাক করে। এতে আমাদের কোনো মতামত নেয় না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় একটা পরিষদ আছে,সেখানে আমরা আলোচনা করেছি,আমাদের মতামত তেমন গুরুত্ব নেই। এটা ওনারা ঠিক করেন,কোথায় কিভাবে হবে। সুতরাং আমাদের এখানে বলার কিছু নাই।’
তিনি আরও বলেন, ‚শিক্ষার্থীরা যেমন হতাশায় আছে আমিও তেমন হতাশায় আছি। কারণ একই নামে এটা ঠিক হয় নাই। বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এ নামে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নাই এটা হতে পারতো। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশে একজনই আছে আর একজনই থাকবে। বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় আর কেউ হবে না।’
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরাও যেমন হতভম্ব হয়ে গেছে আমরাও অনেকটা হতভম্ব। তোমরা তোমাদের অভিমত ব্যক্ত করতে পারো সরকারের কাছে যে, আপনারা বঙ্গবন্ধুর নামেই দেন কিন্তুু নামটা একটু ভিন্ন করে দেন। যেমন: পিরোজপুর,বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।’
এ বিষয়ে ইউজিসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দিল আফরোজ বলেন, ‘এটাতো আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনেক আগে পাঠিয়ে দিয়েছি যে, এক নামে দুই বিশ্ববিদ্যালয় চলতে পারে না।’
মন্তব্য